স্টাফ রিপোর্টার : | বৃহস্পতিবার, ১২ এপ্রিল ২০১৮ | পড়া হয়েছে 303 বার
যৌতুকের জন্য মাদকাসক্ত স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে কাজল (২৫) নামে এক গৃহবধূ রাস্তায় অচেতন হয়ে পড়েছিলেন। পথচারীরা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে এক এক পুলিশ সদস্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। গতকাল বুধবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি হলেও এখ নপর্যন্ত কাজলের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার কোন খোঁজ নেয়নি। শয্যাপাশে রয়েছেন তার ছোট তিনটি অবুঝ শিশু সন্তান ও দুই ভাই। নির্যাতনের শিকার কাজল জেলার নবীনগর উপজেলার কাইতলা ইউনিয়নের কোনাউরা গ্রামের নূর ইসলামের মেয়ে। মারধরের ফলে তার মাথা ও চোখ ফুলে গেছে। কাজল জানায়, প্রায় ১০ বছর পূর্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাদুঘর গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে আরিফের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর জানতে পারি সে মাদকাসক্ত। নেশার টাকার জন্য প্রায়ই আমার উপর শারিরীক নির্যাতন করতো। কয়েকবার বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিয়েছি। সে কোনো কাজ না করায় সংসার চালানোর জন্য ভাইদের কাছ থেকে টাকা আনতাম। আমি অন্যের বাড়িতে ঝি এর কাজ করতে চাইলেও সে বাধা দিত। সম্প্রতি আমার কাছে একটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা কেনার টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে আরিফ। তবে কাজলের পরিবার অটোরিক্সা কেনার জন্য টাকা দেয়ার সামর্থ ছিল না। গত মঙ্গলবার নেশা করে সারারাত বাড়ির বাইরে ছিল আরিফ। বুধবার সকালে বাড়ি আসার পর কাজল সারারাত কোথায় ছিল জানতে চাইলে তাকে ব্যাপক মারধর করে বাড়ি বাইরে রাস্তায় ফেলে দেয়। মারধরের কারণে অচেতন হয়ে পড়ি। জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি’র) ওয়াচার মোয়াজ্জেম হোসেন তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
কাজলের বড় ভাই মামুন বলেন, পুলিশ সদস্য মোয়াজ্জেম ফোন করে কাজলকে হাসপাতালে ভর্তির কথা জানান। শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাদের কিছু জানায়নি। যৌতুকের টাকার জন্য তারা আমার উপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
ডিএসবির ওয়াচার মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, হাসপাতালে অন্য একটি বিষয়ে খোঁজ নিতে এসে দেখি জরুরি বিভাগে অক্সিজেন লাগানো অবস্থায় পড়ে আছে কাজল। পরে চিকিৎসকের সাথে কথা বলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তির ব্যবস্থা করি। বিষয়টি সদর মডেল থানার ওসিকেও জানিয়েছি। সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নবীর হোসেন জানান, এখনও পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তারপরও বিষয়টি আমরা দেখছি।