প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন ২০১৬ | পড়া হয়েছে 505 বার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পাদুকা শিল্পীদের ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়ে গেছে । প্রায় তিন শতাধিক জুতা তৈরির কারখানায় প্রায় সাত হাজার শ্রমিক দিন-রাত কাজ করছে। আর এসব কারখানার তৈরি জুতো জেলার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের সর্বত্র। জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৯৮৪ সালের দিকে দু-একটি পাদুকা কারখানা গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে উদ্যোক্তারা এ শিল্পের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে গড়ে তুলে নতুন নতুন কারখানা। বর্তমানে এই জেলায় ৩ শতাধিক পাদুকা কারখানা রয়েছে। আর এসব কারখানায় প্রায় সাত হাজার শ্রমিক কাজ করছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের পশ্চিম
মেড্ডা পীরবাড়ি বাজার, শহরতলীর নাটাই বটতলী বাজার, ভাটপাড়া, রাজঘর, জনতা মাকের্ট, অষ্টগ্রাম, ভাদুঘরে গড়ে ওঠেছে ওইসব পাদুকা কারখানা। নতুন নতুন ডিজাইন, আধুনিক, মানসম্মত ও রুচিশীল জুতা তৈরী হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তৈরি জুতার বাজার গড়ে উঠেছে। এখানকার লালা, রক্সি, রাকিব, জিপসি, ইপসি, সিটি, দিশাসহ নানা নামের জুতার রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। রাকিব সুজ এর মালিক হাকিম মৃধা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, আমাদের তৈরি জুতো স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কুলাউড়া, হবিগঞ্জ, কুমিল¬া, চাঁদপুর, ফেনী, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, চট্টগ্রাম, টাঙ্গাইল, জামালপুর, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, নেত্রকোনায় যাচ্ছে। তাছাড়া রাজধানী ঢাকার অভিজাত মার্কেটেও পাওয়া যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জুতো। সিলেট জেলা থেকে আসা পাইকার মোঃ আলাউদ্দিন জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তৈরি জুতার ডিজাইন আধুনিক ও মানসম্মত এবং টেকসই। আমাদের মার্কেটে এই জুতার বেশ চাহিদা রয়েছে। কারখানার মালিকরা জানান, চামড়া, রাবার, সোল, ফোম ও রেক্সিন দিয়ে বিভিন্ন ডিজাইনের জুতা তৈরি করা হয়। তবে এসব উপকরণগুলো স্থানীয় বাজারে পাওয়া যায়না বলে অনেক সময় উৎপাদন ব্যাহত হয়। বর্তমানে জুতা তৈরির উপকরণের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাদুকা প্রস্তুতকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ছফিউল্লাহ জানান, আগে এক কাঁধি পেস্টিং (১২ কেজি) এর দাম ছিল দেড় হাজার টাকা, এখন এর দাম প্রায় চার হাজার টাকা। প্রতি গজ রেক্সিন তিনশ টাকার স্থলে এখন বেড়ে হয়েছে সাতশ টাকা। সমিতির সভাপতি মোঃ মহসিন মিয়া জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পাদুকা শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি পর্যায়ে সহযোগিতা ছাড়াও কারিগরদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ, সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ, বিসিক শিল্প নগরীতে প¬ট বরাদ্দ সহ স্থানীয়ভাবে ট্যানারি স্থাপন করা হলে এ শিল্পের আরো প্রসার ঘটবে।