বাঞ্ছারামপুর প্রতিনিধি | রবিবার, ০৩ জানুয়ারি ২০১৬ | পড়া হয়েছে 837 বার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে ২ শতাধিক মাইকে প্রচার করে লটারীর নামে জুয়ার টিকেট প্রকাশ্যে প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে। লটারীর নামে ঐ জুয়ার ড্র’র ফলাফল সরাসরি স্থানীয় একটি ডিস চ্যানেলে প্রচার করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, উপজেলা প্রশাসন ও বাজারের মোড়ে রিক্সা এবং অটোবাইক থামিয়ে ২০ টাকা করে লটারীর টিকেট বিক্রি করতে দেখা গেছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অবগত থাকলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, উপজেলা সদরের জগন্নাথপুর মাঠে বাঞ্ছারামপুর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল কর্তৃক আয়োজিত বিজয় মেলা গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে মাস ব্যাপী শুরু হয়। ঐ অনুষ্ঠান উন্মুক্ত হওয়ায় অনুষ্ঠানের খরচ মেটাতে “দৈনিক স্বপ্নতরী র্যাফেল ড্র” নামে এই জুয়ার টিকেট প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ৪৩১টি গ্রামে ১১০টি মাইকে করে প্রকাশ্যে লটারীর টিকেট বিক্রি চলছে। এতে শিক্ষার্থী, গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ লটারীর টিকেট কিনে প্রতিদিনই প্রতারিত হচ্ছে। প্রতি রাতেই উল্লেখিত লটারীর অনুষ্ঠানটি স্থানীয় একটি ডিস চ্যানেলের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে।
সদর উপজেলার দিনমজুর সহিদ মিয়ার স্ত্রী মাজেদা বেগম বলেন, আমার স্বামী প্রতিদিনের মজুরির টাকা দিয়ে জুয়ার টিকেট কিনে আজ ঘরে ভাত নেই। একই এলাকার রশিদ মিয়ার ছেলে রফিক (২০), ঘর হতে জোরপূর্বক চুরি করে, চাল বিক্রি করে এই লটারীর টিকেট কিনে এখন নেশায় পরিণত হয়েছে।
এব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ড. মুশাররফ হোসেন বলেন, বাঞ্ছারামপুরে বিজয় মেলা বা এই লটারীরর নামে জুয়ার আসরের কোনো অনুমতি নেই। আমি বিষয়টি দেখব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-ই-খাজা আলামীন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আপনারা পত্রিকায় নিউজ করুন। আমি একদিনই বন্ধ করে দিব।
পৌরসভা মেয়র খলিলুর রহমান (টিপু মোল্লা) বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত। আমি এলাকার বাইরে আছি। এই চরম অন্যায় কাজটি মঙ্গলবারের মধ্যে বন্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।
ইউনিসেফ এর স্থানীয় ফোকাল পারসন সাংবাদিক ফয়সাল খান বলেন, পাঁচ বছরের শিশু থেকে ৭০ বছরের নারী-পুরুষ বৃদ্ধরা এই অনৈতিক কাজে প্রতিদিন প্রলুপ্ত হচ্ছে। এটা অন্যায়, এটা শীঘ্রই বন্ধ হওয়া উচিত। নইলে সমাজে কালো ছায়া নেমে আসবে।