ষ্টাফ রিপোর্টার | বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল ২০১৬ | পড়া হয়েছে 335 বার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের বাড়াইল গ্রামের ভোটার ও প্রার্থীরা সুষ্ঠু ভোট নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবে কিনা এই নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে ভোটাররা। কারণ বাড়াইল গ্রামের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল হাসান (অটোরিক্সা প্রতীক) ও তার লোকজন প্রকাশ্যে ভোট কেন্দ্র দখল করে নিজেদের ব্যালটে সীল মারার ঘোষনা দিয়ে বেড়াচ্ছে। উপজেলা সলিমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরও হাসানের বাড়াইল গ্রামের ছয়জন প্রার্থীকে ছায়া ভোটের নামে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে তাদের স্বাক্ষর নিয়ে মনোনয়নপত্র নিজেই প্রত্যাহার করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিদিনই চলছে বহিরাগত সন্ত্রাসীসহ হাসান বাহিনীর মহড়া। এতে এলাকাবাসী ও ভোটারদের মাঝে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আবুল হাসান ওরফে সন্ত্রাসী হাসানের বিরুদ্ধে এলাকায় চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও শালিস বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে।
বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল হাসানের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ২০ আগস্ট সলিমগঞ্জ বাজারে স্বর্ণের দোকানে চাঁদাবাজি, অস্ত্র প্রদর্শন করে ছিনতাইসহ নির্যাতনের অভিযোগে দ্রুত বিচার আইনে নবীনগর থানায় বাড়াইল গ্রামের মাখন সূত্রধর ও সলিমগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী দোলন চন্দ্র সাহা বাদী হয়ে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেন।
এর আগেও আবুল হাসানের বিরুদ্ধে বাড়াইল গ্রামের এ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল বাকির বাড়িতে আগুন, ভাংচুর ও তার বৃদ্ধ মাকে নির্যাতনের ফলে নবীনগর থানায়ও আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এদিকে সলিমগঞ্জ বাজারের কাঠ ব্যবসায়ী লাল মিয়ার কাছে চাঁদা দাবি করলে তিনি চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে তাকে বেঁধে বেদরক মারধর করায় এঘটনায় নবীনগর থানায় মামলা হয়েছে।
এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খোরশেদ আলম বলেন, ‘হাসানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় চারটি মামলা হয়েছে তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে। সেই হাসান গ্রামবাসীকে নিয়ে বৈঠক করে প্রকাশ্যে ভোট নেওয়ার হুংকার দিয়েছে। এমনকি গ্রামবাসীকে পক্ষে নিয়ে সে নৌকা প্রতীককে ভরাডুবি করতে তার অটোরিক্সা প্রতীকের পক্ষে ভোট নেবে। বিষয়গুলো আমি আমাদের দলীয় শীর্ষ নেতাদের বলে রেখেছি।’
এদিকে সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মো. গোলাম রব্বানী নয়ন, ‘শুধু বাড়াইল কেন, পুরা সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের ভোটই নাকি কেটে ফেলা হবে। তবে বাড়াইল গ্রামে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল হাসান ছায়া ভোটের নামে প্রকাশ্যে তাকে ভোট দেওয়ার ঘোষণা মোটেও সঠিক হয়নি।’
এব্যাপারে বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল হাসান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ষড়যন্ত্রমূলক চারটি মামলা হয়েছে। এসব মামলাগুলো বাদীদের সাথে মিট করে ফেলেছি। আমরা গ্রামবাসী ছায়া ভোটের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমার পক্ষে ভোট দেওয়ার ঘোষনা দিয়েছে। প্রকাশ্যে ভোট নেওয়া কিংবা ভোট কেটে ফেলার অভিযোগ মোটেও সঠিক না।’
এবিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বদর-উজ-দোজা বলেন, ‘সলিমগঞ্জ এলাকায় বিদ্রোহী প্রার্থী হাসান কেন, কোনো প্রার্থীই প্রকাশ্য ভোট নেওয়া কিংবা ভোট কাটা সম্ভব নয়।’